অক্সফোর্ডে চলছে করোনা ভ্যাকসিনের পরীক্ষা, আশাবাদী সকলে
তৈরী হচ্ছে চ্যাডক্স ১, আশা করা হচ্ছে এটাই হবে মানুষের রক্ষা কবজ
@ দেবশ্রী : এই মুহূর্তে বিশ্বের প্রত্যেকটা মানুষ অপেক্ষা করছে কেবল করোনা ভ্যাকসিনের জন্য। তা কবে আসবে সেটাই প্রশ্ন। এই রোগের থেকে মুক্তি পেতে, একমাত্র পথ ভ্যাকসিন। কিন্তু বিজ্ঞানীরা কবে সেই লড়াইয়ের সরঞ্জাম তৈরি করতে পারবে, সেটাই এই লাখ টাকার প্রশ্ন। আপাতত আশা দেখাচ্ছে লন্ডনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। কারণ সেখানে শুরু হল মানবদেহে পরীক্ষা-নিরীক্ষা। বিজ্ঞানীদের আশা সেপ্টেম্বরের মধ্যে ফল মিলবে।
আপাতত দু’জনের শরীরে শুরু হয়েছে পরীক্ষা। ৮০০ জন স্বেচ্ছাসেবকের মধ্যে বেছে নেওয়া হয়েছিল দু’জনকে। তবে প্রথম যার শরীরে ইঞ্জেকশন পুশ করা হয়েছে তিনি একজন মহিলা। নাম এলিসা গ্র্যানাতো। তিনি নিজেও একজন বিজ্ঞানী। নিজের ইচ্ছাতেই তিনি এগিয়ে এসেছেন করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে। এলিসা জানিয়েছেন যে তিনি আশাবাদী এই ভ্যাকসিন খুব শীঘ্রই তৈরি করা হবে।
দু’রকম ভাবে চলবে পরীক্ষা। ভ্যাকসিন পরীক্ষার অংশগ্রহণকারীদের দুটি দলে ভাগ করা হয়েছে। একদলের ওপর চলবে করোনার পরীক্ষা, অন্য দলটি বেছে নেওয়া হয়েছে ম্যানিনজাইটিস ভ্যাকসিনের জন্য। যাদের শরীরের ওপর গবেষণা চালানো হবে, বর্তমানে তাদের রাখা হয়েছে পর্যবেক্ষণে।
অক্সফোর্ড যে ভ্যাকসিনটি তৈরি করতে চলেছে তার নাম দেওয়া হয়েছে চ্যাডক্স ১। কীভাবে কাজ করবে এই ভ্যাকসিন? জানা যাচ্ছে যে এটি সাধারণ সর্দি-কাশির-জ্বরের ভাইরাস (যাকে অ্যাডিনোভাইরাস বলা হয়) যা শিম্পাঞ্জিদের থেকে তৈরি হয়। মারণ করোন ভাইরাসের উপরে থাকা প্রোটিন থেকে বিজ্ঞানীরা নিয়েছেন জিন এবং তা মেশানো হয়েছে এমন ভাইরাসের সঙ্গে যা শরীরে কোনও ক্ষতি করবে না। এর থেকেই ভ্যাকসিন তৈরি হবে। এই রসটি মানব দেহে ইনজেক্ট করা হচ্ছে। মানুষে দেহে প্রবেশ করে তা করোনাভাইরাস স্পাইক প্রোটিন তৈরি করবে এই রস। এরাই আবার শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা থেকে অ্যান্টিবডি তৈরি করে মারণ করোনার সঙ্গে লড়াই চালাবে।
যে বিজ্ঞানীরা এই পরীক্ষায় সামিল হয়েছেন, তারা হলেন সারা সিলবার্ট, অ্যান্ড্রু পোলার্ড, স্যান্ডি ডগলাস, টেরেসা ল্যাম্ব, অ্যাড্রিয়ান হিল। তারা জানাচ্ছেন এই ধরণের পরীক্ষার মধ্যে কোনও ভয় থাকছে না। এবং যে ভ্যাকসিন তৈরি হবে তা সব বয়সের জন্যই ব্যবহার যোগ্য। এখন আশা একটাই এই পরীক্ষা যেন সফল হয়। কারন তাহলেই আবার প্রাণ খুলে বাঁচতে পারবেন মানুষ।